শিক্ষিকাদের খেয়াল খুশিমত চালাচ্ছে মানিকগঞ্জে ভাটবাউর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
সকাল ৯টায় বিদ্যালটিতে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়টিতে প্রধান শিক্ষিকা জবেদা খাতুন এবং সহকারী শিক্ষিকা রোকেয়া পারভীন ছাড়া আর কোন শিক্ষিকার উপস্থিতি নেই। এরপর ৯টা ১২ মিনিটে উপস্থিত হন সহকারী শিক্ষিকা শেলিনা আক্তার। এরপর সহকারী শিক্ষিকা শাহানাজ আক্তার ৯টা ২৩ মিনিটে এবং আরেক সহকারী শিক্ষিকা তাহমিনা সুলতানা তানিয়া উপস্থিত হন ৯টা ২৪ মিনিটে। এর কিছুক্ষণ পর সহকারী শিক্ষিকা আফরোজা আক্তার উপস্থিত হন ৯টা ২৮ মিনিটে।

মানিকগঞ্জে প্রাথমিক শিক্ষা অফিসকে বৃদ্ধা আঙ্গুল দেখিয়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে নিজেদের ব্যক্তিগত সময় অনুযায়ী পরিচালনা করে আসছেন বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষিকারা।
অনুসন্ধানে জানা যায়, মানিকগঞ্জ সদর উপজেলায় অবস্থিত ১৯ নং ভাটবাউর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। দীর্ঘদিন ধরে সরকারি আইন অমান্য করে নিজেদের ব্যক্তিগত সময় অনুযায়ী বিদ্যালয়টি পরিচালনা করে আসছেন দায়িত্বরত প্রধান শিক্ষিকা জবেদা খাতুন সহ অন্যান্য শিক্ষিকারা।
সকাল ৯টায় বিদ্যালটিতে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়টিতে প্রধান শিক্ষিকা জবেদা খাতুন এবং সহকারী শিক্ষিকা রোকেয়া পারভীন ছাড়া আর কোন শিক্ষিকার উপস্থিতি নেই। এরপর ৯টা ১২ মিনিটে উপস্থিত হন সহকারী শিক্ষিকা শেলিনা আক্তার। এরপর সহকারী শিক্ষিকা শাহানাজ আক্তার ৯টা ২৩ মিনিটে এবং আরেক সহকারী শিক্ষিকা তাহমিনা সুলতানা তানিয়া উপস্থিত হন ৯টা ২৪ মিনিটে। এর কিছুক্ষণ পর সহকারী শিক্ষিকা আফরোজা আক্তার উপস্থিত হন ৯টা ২৮ মিনিটে।
এদিকে দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পরও বিদ্যালয়টির আরেক সরকারি শিক্ষিকা শারমিন আক্তারের উপস্থিতি নেই। তার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, আমি শিক্ষা অফিসের অনুমতি নিয়েই মাস্টার্সে ভর্তি হওয়ার জন্য কলেজে এসেছি। আমি প্রধান শিক্ষিকাকে বলে এসেছি যদি সাড়ে নয়টার মধ্যে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হতে পারি তাহলে ক্লাস নেবো আর না পৌঁছাতে পারলে আজকে আমি ছুটি কাটাবো।
স্থানীয় জনসাধারণ জানান, এই স্কুলের শিক্ষকরা একেবারেই বেখেয়ালি। এরা সঠিক ভাবে নিজেদের দায়িত্ব পালান করে না। এরা অধিকাংশ সময় নিজেস্ব গল্প গুজবে মেতে থাকেন। এদেরকে অতি দ্রুত এই স্কুল থেকে বদলি করে দায়িত্বশীল শিক্ষক আনা প্রয়োজন।
এরপর উপস্থিত সকল শিক্ষিকাদের ক্লাস শুরু কয়টায় এমন প্রশ্নের জবাবে কোন শিক্ষক সঠিক ক্লাস শুরুর কোন সময় বলতে পারেন নি। তারা সবাই নিজেদের মতো ব্যক্তিগত ক্লাস শুরুর সময় বলতে থাকেন।
এক পর্যায়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের হাজিরা খাতা খুললে দেখা যায়, হাজিরা খাতায় সকল শিক্ষিকাদের উপস্থিতি সকাল ৯ টা উল্লেখ করে স্বাক্ষর করা হয়। এতে হাজিরা খাতায় ব্যাপক দুর্নীতি লক্ষ্য করা যায়।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, এই বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষিকা কখনোই সঠিক সময়ে আসেন না। যখন খুশি তখন আসেন। তাদের ক্লাস বেশির ভাগ সময়ই সকাল সাড়ে ৯টায় বা ১০টায় শুরু হয়। এসব বিষয়ে প্রধান শিক্ষিকা সত্যতা বলে বক্তব্য প্রকাশ করে বলেন আমরা অতিরিক্ত গরমের কারণে ৯.৩০ মিনিটে ক্লাশ শুরু করি।
সুশীল সমাজের ব্যক্তিরা দাবি করেন, শিক্ষকদের এমন অপকর্মকাণ্ড কখনোই মেনে নেওয়ার মতো নয়। এই সব সমস্যা অতি দ্রুত সমাধান না হলে বিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা কখনো সুশিক্ষায় শিক্ষিত হতে পারবে না। ফলে ভবিষ্যতে এরা জাতির বোঝা হয়ে দাঁড়াতে পারে।
এসব বিষয় সম্পর্কে বিদ্যালয়টির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা জানান, আমরা কোন অনিয়মের মধ্যে নেই। আমরা কেউ কখনো দেরি করে বিদ্যালয়ে আসি না।
এসব বিষয়ে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের এসব অনিয়মের কোন সুযোগ নেই। আমি অতি দ্রুত তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ করিবো।